এই ফলে নতুন ফ্যাশন ধারা

এই ফলে নতুন ফ্যাশন ধারা

ফল কালেকশন নিয়ে ফ্যাশন-সচেতন মানুষেরা সবসময়ই উৎসুক হয়ে থাকেন। প্রায় সব বয়সী ক্রেতারাই কৌতুহলী হয়ে থাকে ফল ফ্যাশনের নতুন রঙ, ডিজাইন ও প্যাটার্ন ইত্যাদি নিয়ে জানতে। ইতোমধ্যেই দেশী-বিদেশী ফ্যাশন হাউজগুলো তাদের আকর্ষনীয় ফল কালেকশন নিয়ে এসেছেন।

মেয়েদের ফল ফ্যাশনে এবার বেশ ভিনটেজ পোশাকের দেখা মিলছে।  যা  কোজি ও স্টাইলিশ লুক দেওয়ার পাশাপাশি দিচ্ছে উষ্ণতার ছোঁয়া। আর ডিজাইনের ভিন্নতা তো আছেই। অন্যান্য সময়ের ফ্যাশন ট্রেন্ডের তুলনায় এবারের ফল ফ্যাশনের পোশাক বৈচিত্র্যময় ও অনেক বেশি বোল্ড হয়েছে।  ছেলেদের ফল ফ্যাশনে মেয়েদের ফল ফ্যাশনের মতো এত বৈচিত্র্য না থাকলেও কাপড়ের রঙ,  নকশা ও বয়নের পরিবর্তন তো আছেই। বাচ্চাদের ফল ফ্যাশনেও আরামকে প্রাধান্য নিয়ে স্টাইলিশ ও কোজি লুক আনা হয়েছে।  শীত আগমনের ঠিক আগের এই সময়টাতে কর্মস্থলে ও অনুষ্ঠানে ফ্যাশনেবল ও মানানসই  পোশাকে নিজেকে উপস্থাপন করতে ফল ২০২৩-স্টাইলিংয়ের বিস্তারিত জেনে নিন এই ব্লগে।

কোন রঙের আধিপত্য এবার?

এবার ফল ফ্যাশনে কোন রঙ বেশি চলবে?’  যাকেই এ প্রশ্ন জিজ্ঞেস করা হোক না কেন, উত্তর  আসবে আর্থি কালার টোন।  চলবে লাল, কমলা, গাঢ় বেগুনি, সবুজের বিভিন্ন শেড বিশেষ করে জলপাই রঙ ও গার্ডেন গ্রিন, হাল্কা গোলাপি, সামুদ্রিক নীল রঙ, হলুদ, ধূসর ও হালকা বাদামী ।  মেয়েদের ফল ফ্যাশনে এ ধরনের রঙের শাড়ি, সালোয়ার-কামিজ, কুর্তি, টিউনিক, ফতুয়া জায়গা পাবে। কুর্তি, টিউনিক ও ফতুয়ার সাথে জিন্স সহজেই মানিয়ে যায়। তাই রঙ নিয়ে বেশি চিন্তায় পড়তে হয়না।
তাছাড়া এবারের ফল ফ্যাশনে নজর কাড়ছে মনোক্রোমাটিক ফ্যাশন অর্থাৎ একই রঙের বা একই রঙের ভিন্ন শেডের টপ-বটম ফ্যাশনধারা। টপ যে রঙের, সে রঙের বটম বা সেই শেডের একটু হালকা বা গাঢ় রঙের বটম দিয়ে সহজেই তৈরি করা যায় মনোক্রোমাটিক লুক।

পেপলাম ডিজাইন

ছোটবেলায় বার্বি-সিন্ড্রেলার গল্প শুনে  মেয়েদের  ভলিউমড পোশাকের প্রতি একটা আলাদা ভালোলাগা জন্ম নেয়।  ভলিউমড পোশাক বিজয়ী বেশে আবার ফিরেছে ফ্যাশন ধারায়।  কোমর থেকে ভলিউম  যোগ করা পোশাক এবার মেয়েদের ফল ফ্যাশনে প্রাধান্য পেয়েছে সবচেয়ে বেশি।  শার্ট, টপ্স, টিউনিক ও স্কার্টে দেখা যাবে এই পেপলাম ডিজাইন । টপ বডি সরু থেকে কোমরের নিচ থেকে স্তর তৈরি করবে। যা পোশাকে ভলিউম আনবে, টপ বডিতে কোনো জোড়া ছাড়াই। এধরনের ডিজাইনকেই বলা হয় পেপলাম।  মেয়েদের ফল ফ্যাশন ধারায় শার্ট, শর্ট টপ্স ও টিউনিকগুলোতে   চোখে পড়বে এই পেপলাম ডিজাইন।  জিন্স বা ল্যাগিংস  সহজেই মানিয়ে যাবে এই  ড্রেসগুলোর সাথে। মেয়ে বাচ্চাদের ফল ফ্যাশনেও পেপলাম ডিজাইনের ফ্রক, স্কার্ট, টপ্স জায়গা করে নিয়েছে।

 হাই-ওয়েইস্ট ফুল স্কার্ট

আধুনিক ও স্মার্ট ড্রেসিং সেন্স যাঁদের আছে, তাঁদের সকলেরই পছন্দের পোশাক হল স্কার্ট।  সময়ের সাথে পোশাকে নানা রকম পরিবর্তন এলেও,স্কার্ট এখনও জনপ্রিয়তার শীর্ষে।আর হাই ওয়েস্ট লম্বা স্কার্ট-এর ফ্যাশন মনে করিয়ে দেয় ৭০ দশকের ফ্যাশন ধারাকে। শুধু ছড়ানো শার্ট, টপ্স, টিউনিকই নয় মেয়েদের ফল ফ্যাশনে থাকবে ভলিউম যোগ করা সার্কেল স্কার্টও । এক রঙা কোনো টিশার্ট বা টপ্স দিয়ে সহজেই এই সার্কেল স্কার্ট স্টাইলিং করা যেতে পারে।   তাছাড়া আইকনিক পল্কা ডটের পাফি হাতার শর্ট টপ্সের সাথে বড় ঘের দেওয়া স্কার্ট – ভিনটেজ ভাইবের সাথে ফ্যাশনও হবে পুরোদমে। এই ফ্যাশনেবল হাই ওয়েস্ট স্কার্ট জায়গা পেয়েছে ছোট-বড়  সবার ফল ফ্যাশনে।

চেক ও টার্টান

চেক শার্ট ছেলেদের ফ্যাশনে সবচেয়ে বেশি পরিচিত। দুরঙের চেক প্যাটার্ন সবসময়ই দেখা যায়। চেক এতদিন বাজার মাতিয়ে রাখলেও এই ফল-এ দেখা গেছে টারট্যান প্লেইড প্যাটার্নের আধিক্য। দুয়ের বেশি রঙ কন্ট্রাস্ট করে হরাইজেন্টাল ও ভারটিক্যাল স্ট্রাইপগুলো সহজ বা জটিল আয়তক্ষেত্র তৈরি করে। দুয়ের অধিক রঙের এই চেককেই বলা হয় টারট্যান প্যাটার্ন। টারট্যান প্যাটার্নের শার্ট নারী ও পুরুষ, উভয়ের ফল ফ্যাশনেই রাজত্ব করছে। তাছাড়া মেয়েদের ফল ফ্যাশনে টার্টান প্যাটার্নের শার্ট, টিউনিক,   স্কার্ট কিংবা পুরো টপ- বটম সেট আপনাকে করে তুলবে আরও ফ্যাশনেবল। তাছাড়া টার্টান প্যাটার্নের ব্লাউজও ক্লাসি লুক তৈরি করছে।

ফ্লোরাল প্রিন্ট

আন্তর্জাতিক ফ্যাশনে যখন ফল সিজন, বাংলাদেশে তখন শরত-হেমন্ত। এসময় প্রকৃতির লীলার সাথে মেতে ফ্লোরাল প্রিন্ট সব কালেই জনপ্রিয়তার তুঙ্গে থাকে। প্রতি ফলেই ফ্লোরাল প্রিন্ট বড় একটা জায়গা দখল করে নেয় ফ্যাশনে।

এবার ফল ফ্যাশনেও টারট্যান প্যাটার্নের পাশাপাশি বিভিন্ন ফ্লোরাল প্রিন্ট, আর্ট প্রিন্টও বেশ দেখা যাবে । থ্রি ডি ফ্লোরাল এর স্কার্ট, শাড়ি দিয়ে নিজেকে রুচিশীল ও ফ্যাশনেবল করে উপস্থাপন করা সহজও বটে। ছেলেদের ফল ফ্যাশনেও ছোট ফ্লোরাল প্রিন্টেড শার্ট বেশ কোজি লুক এনে দিচ্ছে।

ড্রামাটিক স্লিভের বৈচিত্র্য

আরামদায়ক পোশাকের কথা যখনই আসে, সব বয়সি মানুষই চায় একটু ঢিলেঢালা আরামদায়ক কিছু। ঢিলেঢালা হাতা বা ড্রামাটিক স্লিভস গত কয়েক বছর ধরেই স্থান করে আছে ফ্যাশন ট্রেন্ডে।  ফ্লাফি হাতা যেমন বেল, বাটারফ্লাই, ডলমেন, লেগ অফ মাটান ও ল্যান্টার্ন স্লিভস বেশ দেখা যাচ্ছে এবারের মেয়েদের ফল ফ্যাশনে। ফ্লাফি ড্রেসের সাথে ফ্লাফি হাতা মানিয়ে যাবে বেশ। ফতুয়া, টপ্স, কুর্তি ও টিউনিকে এসব হাতা দেখতে যেমন রুচিশীল, পরতেও তেমন আরামদায়ক। তাছাড়া ফ্লাফি হাতার ব্লাউজ দিয়ে শাড়ির স্টাইলিং করাও খুব সহজ। যাঁরা সেলোয়ার-কামিজ পরেন তাঁরাও ঢিলেঢালা হাতা দিয়ে কামিজ পরতে পারেন।

গলার ডিজাইন

নানা বৈচিত্র্যের নকশা, রঙের পোশাক যেমন ফ্যাশনে গুরুত্বপূর্ণ, তেমন গলার কাটছাঁটও। এই ফলে স্কুপ ও ভি নেক বেশি দেখা যাচ্ছে। গোল গলার মতোই পেছনে অল্প ও সামনে বেশি কার্ভ করে কাটা গলাই স্কুপ নেক হিসেবে পরিচিত। মেয়েদের সবধরনের পোশাকেই স্কুপ নেকের প্রভাব চোখে পড়বে। পাশাপাশি রয়েছে ভি নেক। ফুলহাতা বা স্লিভলেস যে কোনও হাতার ডিজাইনের সঙ্গে সহজেই মানিয়ে যায় ভি গলার সঙ্গে, বিশেষ করে ব্লাউজে ও শর্ট টপসের সাথে।

লেখা: কানিজ ফাতেমা

 

  • No products in the cart.
Filters
x